ষষ্ঠ পর্যায়ের খনন মোগলমারিতে :
ষষ্ঠ পর্যায়ের খননকার্য শুরু হল দাঁতনের মোগলমারিতে। চলবে
২৫ মার্চ পর্যন্ত। শেষ পর্যায়ের এই খননকার্যে প্রত্নক্ষেত্রটির
দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে খনন করা হচ্ছে। এর ফলে সমগ্র বৌদ্ধবিহারের নকশা তৈরি
করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন খননকার্যের দায়িত্বে থাকা কলকাতা
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রাক্তন প্রধান অশোক দত্ত। তিনি
জানান, বৌদ্ধবিহারটির নাম নির্দেশক কোনও লিপি পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে এ
বার। খননকার্য শেষে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণে চূড়ান্ত রিপোর্ট পাঠানো
হবে। এ দিনই প্রত্নক্ষেত্রের উত্তর-পূর্ব দিকে একটি দিঘির পাড়ে খনন করার
সময় নারীমূর্তির মুখের অংশাবশেষ মিলেছে। মূর্তির মাথায় রয়েছে তিন খোঁপার
অলঙ্করণ। অশোকবাবুর মতে, খণ্ডিত মূর্তিটি গুপ্তযুগের পরবর্তী সময়ে। অষ্টম
শতাব্দীর। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে বৌদ্ধবিহার লাগোয়া কোনও ব্যক্তির
বাড়ি বা মন্দিরের দেওয়ালের অলঙ্করণের অংশ এটি। এ দিন পোড়া মাটির তৈরি
নানা সামগ্রীর ভগ্নাংশও উদ্ধার হয়েছে। হিউয়েন সাং বর্ণিত তাম্রলিপ্ত রাজ্যের অধীন যে ১০টি বৌদ্ধবিহার ছিল, তার
মধ্যে অন্যতম এই মোগলমারি। অনুমান, এই বৌদ্ধবিহারের সমৃদ্ধিকাল গুপ্তযুগের
শেষ ভাগে (সপ্তম শতক) বা পাল শাসনের আদি-পর্বে (অষ্টম শতক)। দণ্ডভুক্তি
রাজ্যের অর্ন্তভুক্ত এই বৌদ্ধবিহারটি ষষ্ঠ অথবা সপ্তম শতকে প্রথম নির্মাণ
হয়। দশম শতকের মধ্যে বৌদ্ধবিহারটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কার করা হয়। পরে এটি
ধ্বংস হয়ে গেলে দশম-দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যে তুলনায় ছোট একটি বৌদ্ধবিহার
নির্মাণ হয় পশ্চিম দিকে।
২০০৩-০৪ প্রথমবার এই প্রত্নক্ষেত্রের পশ্চিম ও উত্তর ভাগের বসতি এলাকায় খনন হয়। ২০০৬-০৭ সালে পূর্ব ও দক্ষিণ ভাগে খনন চলে। বসতি এলাকা থেকে বুদ্ধের পাশাপাশি পাওয়া গিয়েছে গণেশ, লক্ষ্মীর মূর্তিও। প্রত্নক্ষেত্রের উপরের দিকে পাওয়া গিয়েছে প্রদীপ, অর্ঘ্য পাত্র, মৃৎপাত্র। ২০০৮ সালে তৃতীয় পর্যায়ের খননকার্যে মেলে পাথরের ভাঙা মূর্তি, কারুকার্যবিশিষ্ট ৪৬টি ইট, ৫ বর্গফুট বিশিষ্ট ৬টি কুঠুরি, দেওয়ালে স্ট্যাকোর অলঙ্করণ, বুদ্ধ-মূর্তির গায়ে পালি লিপি। চতুর্থ দফায় ২০০৯ সালে উত্তর দিকে খনন করে মেলে প্রবেশদ্বার। ২০১০ সালে বৌদ্ধ স্থপতির ভূমি নকশা উদ্ঘাটিত হওয়ার পাশাপাশি দু’শোরও বেশি কড়ি, প্রধান মূর্তির ভিত্তিভূমি-সহ নানা সামগ্রী উদ্ধার হয়। ২০১১ সালে খনন হয়নি। দাঁতন ১-এর বিডিও জ্যোতি দত্ত জানান, খননকার্যের জন্য ২০১০-১১ আর্থিক বছরে আড়াই লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছিল পঞ্চায়েত সমিতি। কিন্তু সে বার দেড় লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছিল। বাকি টাকাতেই এ বার একশো দিনের প্রকল্পে খনন করা হবে। সদ্য শুরু হওয়া এই খননকার্য পরিচালনা করতে অশোকবাবুর নেতৃত্বে আট জনের একটি দল এসেছে মোগলমারিতে। আরও তিন জন প্রত্ন-গবেষক শীঘ্রই যোগ দেবেন সেই দলে। অশোকবাবু বলেন, “রাজ্যে যে তিনটি বৌদ্ধবিহারের নিদর্শন মিলেছে (বাকি দু’টি মুর্শিদাবাদের কর্ণসুবর্ণের রক্তমৃত্তিকা, মালদহের নন্দবিহার) তার মধ্যে সবচেয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ এই মোগলমারি।” এখনও পর্যন্ত এর নাম নির্দেশক লিপি মেলেনি। তবে, এর নাম দন্তপুর মহাবিহার ছিল বলে মনে করছেন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। এর সঙ্গে ওড়িশার খিচিং, উদয়গিরি, ললিতগিরি ও রত্নগিরি বৌদ্ধবিহারের নিবিড় যোগাযোগ ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। মোগলমারি প্রত্নক্ষেত্রটির জমি স্থানীয় মোগলমারি তরুণ সেবাসঙ্ঘ ও পাঠাগারের মালিকানাধীন। সঙ্ঘের অন্যতম যুগ্ম সম্পাদক অতনু প্রধান জানান, খননকার্যে প্রাপ্ত সামগ্রী সমূহ নিয়ে ২৬ মার্চ প্রদর্শনী ও আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছে।
২০০৩-০৪ প্রথমবার এই প্রত্নক্ষেত্রের পশ্চিম ও উত্তর ভাগের বসতি এলাকায় খনন হয়। ২০০৬-০৭ সালে পূর্ব ও দক্ষিণ ভাগে খনন চলে। বসতি এলাকা থেকে বুদ্ধের পাশাপাশি পাওয়া গিয়েছে গণেশ, লক্ষ্মীর মূর্তিও। প্রত্নক্ষেত্রের উপরের দিকে পাওয়া গিয়েছে প্রদীপ, অর্ঘ্য পাত্র, মৃৎপাত্র। ২০০৮ সালে তৃতীয় পর্যায়ের খননকার্যে মেলে পাথরের ভাঙা মূর্তি, কারুকার্যবিশিষ্ট ৪৬টি ইট, ৫ বর্গফুট বিশিষ্ট ৬টি কুঠুরি, দেওয়ালে স্ট্যাকোর অলঙ্করণ, বুদ্ধ-মূর্তির গায়ে পালি লিপি। চতুর্থ দফায় ২০০৯ সালে উত্তর দিকে খনন করে মেলে প্রবেশদ্বার। ২০১০ সালে বৌদ্ধ স্থপতির ভূমি নকশা উদ্ঘাটিত হওয়ার পাশাপাশি দু’শোরও বেশি কড়ি, প্রধান মূর্তির ভিত্তিভূমি-সহ নানা সামগ্রী উদ্ধার হয়। ২০১১ সালে খনন হয়নি। দাঁতন ১-এর বিডিও জ্যোতি দত্ত জানান, খননকার্যের জন্য ২০১০-১১ আর্থিক বছরে আড়াই লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছিল পঞ্চায়েত সমিতি। কিন্তু সে বার দেড় লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছিল। বাকি টাকাতেই এ বার একশো দিনের প্রকল্পে খনন করা হবে। সদ্য শুরু হওয়া এই খননকার্য পরিচালনা করতে অশোকবাবুর নেতৃত্বে আট জনের একটি দল এসেছে মোগলমারিতে। আরও তিন জন প্রত্ন-গবেষক শীঘ্রই যোগ দেবেন সেই দলে। অশোকবাবু বলেন, “রাজ্যে যে তিনটি বৌদ্ধবিহারের নিদর্শন মিলেছে (বাকি দু’টি মুর্শিদাবাদের কর্ণসুবর্ণের রক্তমৃত্তিকা, মালদহের নন্দবিহার) তার মধ্যে সবচেয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ এই মোগলমারি।” এখনও পর্যন্ত এর নাম নির্দেশক লিপি মেলেনি। তবে, এর নাম দন্তপুর মহাবিহার ছিল বলে মনে করছেন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। এর সঙ্গে ওড়িশার খিচিং, উদয়গিরি, ললিতগিরি ও রত্নগিরি বৌদ্ধবিহারের নিবিড় যোগাযোগ ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। মোগলমারি প্রত্নক্ষেত্রটির জমি স্থানীয় মোগলমারি তরুণ সেবাসঙ্ঘ ও পাঠাগারের মালিকানাধীন। সঙ্ঘের অন্যতম যুগ্ম সম্পাদক অতনু প্রধান জানান, খননকার্যে প্রাপ্ত সামগ্রী সমূহ নিয়ে ২৬ মার্চ প্রদর্শনী ও আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছে।
No comments:
Post a Comment